শরিয়তের পরিভাষায় ইতিকাফ বলে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মসজিদে অবস্থান করা। সকল মানুষ ও সংসারের সকল কাজ কর্ম থেকে দূরে থাকা। সওয়াবের কাজ; নামাজ, জিকির ও কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি ইবাদতে নিজেকে ব্যস্ত রাখা।
আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে নির্দেশ দিয়েছি, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্যে পবিত্র করো। (সুরা বাকারা ১২৫)
মদিনায় অবস্থানকালে রসুলুল্লাহ সা. প্রতিবছরই ইতিকাফ পালন করেছেন। শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সা. প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
ইতিকাফের সময় দুনিয়াবি সব কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হয়। এ সময় প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে কারো যদি স্বপ্ন দোষের কারণে গোসল ফরজ হয় তাহলে তার করণীয় বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো
ইতিকাফের সময় কারো গোসল ফরজ হলে এমন ব্যক্তি তাৎক্ষণিক তায়াম্মুম করে মসজিদ থেকে বের হয়ে গোসল করে নেবেন। আর যদি তায়াম্মুম করার মত কোনো কিছু না পায় তাহলে দ্রুত মসজিদ থেকে বের হয়ে গোসল করে আসবে।
গোসল সেরেই তিনি আবার মসজিদে ফিরে আসবেন। মসজিদের বাইরে গোসল ছাড়া অন্য কোনো কাজ বা বিষয়ে সামান্য সময়ও ব্যয় করা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার ১/৪১০)
ইতিকাফে নিষিদ্ধ কাজ
ইতিকাফে থাকাকালীন অতিরিক্ত পানাহার, অধিক ঘুম ও মানুষের সঙ্গে অধিক মেলামেশা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। কেননা এসব বিষয় অন্তরে অস্থিরতা ও পেরেশানি বৃদ্ধি করে। ফলে ইবাদতের প্রফুল্লতা কমে যায়। তাই ইতিকাফের সময় রোজা রাখাকে শর্ত করা হয়েছে। কারণ, রোজা মানুষকে অনর্থ ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখে। আত্মাকে সংযম করে।
ইতিকাফ অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হওয়া, ঝগড়াবিবাদ, পরনিন্দা এবং স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেছেন,
আর যতক্ষণ তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে যৌনকর্ম করো না। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)